সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়তে পারে। আমরা পারস্পরিক আলোচনা করছি, বাড়ানো হতে পারে। তিনি আরও জানান, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়টিকে সরকার ইতিবাচত হিসেবে নিয়েছে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২। দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়া, উচ্চশিক্ষার হার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট, গড় আয়ু বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছেন।
চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসা শিক্ষার্থীরা বলছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছরই করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবিতে গড়ে ওঠা সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ করলেও তাঁদের আন্দোলন চলবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা সঠিক হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন না। ২০১১ সালে চাকরিতে অবসরের বয়স বৃদ্ধির সময় প্রবেশের বয়স ৩২ করলে তখন ঠিক ছিল। এখন ৩৫ বছর করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বা তার বেশি। এ ছাড়া বাংলাদেশেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের আগে দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর। ১৯৯১ সালের জুলাই মাসে সেটা বাড়িয়ে করা হয় ৩০ বছর। এরপর ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সরকারি চাকরিতে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করা হয়।
অবসরের বয়স বাড়ানোর কারণে সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা কমে যায়। ফলে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার পথ সংকুচিত হয়। পাশাপাশি একদিকে চাকরিতে তীব্র প্রতিযোগিতা, আরেক দিকে শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি পেতেও অনেকের দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এ জন্য অবসরের বয়স বাড়ানোর পর থেকেই চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা মানববন্ধন, অনশনসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছেন। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দাবি আরও জোরালো হয়। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি আলোচনা হয়। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দিচ্ছিল না। এর মধ্যে গত জুনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৯ তম সভায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে কমিটির ২১ তম সভায় ৩২ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছিল।
সরকারি বেসরকারি সকল চাকরির খবর পড়তে আমাদের চাকরির খবর পেজে বিজিট করুন।
আরও পড়ুন– বাংলাদেশ বেতার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি – Betar Job Circular 2018
আরও পড়ুন– খাদ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ পরীক্ষার MCQ Test Math – কুইজ