-

মঙ্গল গ্রহে মিলল তরল পানির ‘হ্রদের’ সন্ধান – Water On Mars

মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ মেরুতে তরল পানির ‘হ্রদ’ পাওয়া গেছে। মঙ্গল গ্রহে বরফে আচ্ছাদিত এই হ্রদের আয়তন হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) মতো। এর আগের বিভিন্ন গবেষণায় মঙ্গল গ্রহের কোনো কোনো জায়গায় হঠাৎ হঠাৎ তরল পানির প্রবাহের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও এই প্রথম সেখানে স্থায়ী জলাধারের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। বাতাসের ঘনত্ব কম হওয়ার কারণে ঠান্ডায় জলাধারটি বরফের নিচে আটকা পড়েছে।

মার্শ এক্সপ্রেস নামে যে নভোযান মঙ্গলের কক্ষপথ পরিদর্শন করছে, তার ভেতরে মারসিস নামে একটি রেডার এই জলাধারের সন্ধান পেয়েছে।

এই গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ইটালির ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’র প্রফেসর রবার্ত ওরেসেই বলেন, সম্ভবত এটি খুব বড় হ্রদ না। মার্সিস সনাক্ত করতে পারেনি হ্রদটির গভীরতা কেমন, তবে গবেষক দলের ধারণা এর গভীরতা কমপক্ষে এক মিটার।

তিনি বলেন, তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত যে এটি পানির অস্তিত্ব, একটি হ্রদ। এটি পাথর এবং বরফের মধ্যে অবস্থিত কোন গলিত পানি(তুষার) নয়, যেমনটি পৃথিবীতে সহসাই হয়ে থাকে।

এই হ্রদের সন্ধানে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা সেই প্রশ্ন আবারো দেখা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, মঙ্গলের এই জলাধারে পানির তাপমাত্রা -১০ থেকে -৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ঠান্ডাতেও যে জলাধারটি তরল রয়েছে, তার অর্থ এটিতে প্রচুর লবণ রয়েছে।

ব্রিটেনের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ক্লেয়ার কাজিনস বলেন, ‘এমন হতে পারে ওই পানি খুবই ঠান্ডা এবং লবণ ভর্তি, এই অবস্থা যে কোনো প্রাণীর জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গল গ্রহে অতীতে বা বর্তমানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে যারা খুবই আশাবাদী, তাদেরকে এই গবেষণার ফলাফল আরও উৎসাহিত করবে। কিন্তু এই হ্রদের প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

ওপেন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ম্যাট বাম বলেন, ‘হতে পারে, এখন মঙ্গল গ্রহে এমন একটি অভিযানের পরিকল্পনা করতে হবে, যেখানে বরফ ড্রিল করে অর্থাৎ ফুটো করে ওই জলাধারের পানি পরীক্ষা করতে হবে, যেমনটি অতীতে অ্যান্টার্কটিকাতে করা হয়েছে।’

অ্যান্টার্কটিকার পুরু বরফে ঢাকা ভস্টক হ্রদের শীতল পানিতে বিজ্ঞানীরা ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছিল, তবে মঙ্গল গ্রহে সে ধরনের পরীক্ষা চালানো খুবই কঠিন কাজ হবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ওরোসেই বলেন, ‘এর জন্য মঙ্গল গ্রহে এমন একটি রোবট পাঠাতে হবে, যেটি দেড় মিটার বরফ ছিদ্র করতে সক্ষম। কিন্তু এর জন্য জন্য যে ধরনের প্রযুক্তি দরকার, সেটি এখনো নেই।’

সর্বশেষ প্রকাশিত