ব্যালন ডি’অর জেতার স্বপ্ন করিম বেনজেমা ছোটবেলা থেকেই লালন করতেন এবং চরম ধৈর্য্য, পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তিতে অবশেষে ৩৪ বছর বয়সে তার এ ইচ্ছা পুরন হয়।
ফুটবল বিশ্বে, সবচেয়ে সম্মানীয় পুরস্কার হলো গোল্ডেন বল, যা ব্যালন ডি’অর নামে পরিচিত। করিম বেনজেমা ২০২২ সালে ব্যালন ডি’অর পেয়েছিলেন। কিন্তু তার জীবন ছিল বাজি ধরার মতো ঝুকিপুর্ন। কিন্তু তিনি কখনো পরাজয় মেনে নেননি। আজকের এ লেখায় আমরা জানবো করিম বেনজেমা কোন দেশের প্লেয়ার এবং জীবনকে বাজি রেখে তিনি কিভাবে সফলতা পেয়েছিলেন।
বাজিতে সফল: করিম বেনজেমার উত্থান
করিম বেনজেমা ১৯৮৭ সালে ফ্রান্সের লিওনে করিম মোস্তফা বেনজেমা নামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ওপর রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের বিনিয়োগ করা ছিল বাজি ধরার মতোই যথেষ্ট ঝুকিপু্র্ন। কারন তার যথেষ্ট বয়স হয়ে গেছিল এবং তার থেকে বড়কিছু আশা করা ছিল বোকামি। কিন্তু এ বাজিতে সফল হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ২৫টি ট্রফি জিতেছেন, যার মধ্যে ৪টি লা লিগা শিরোপা, ৩টি কোপা দেল রে শিরোপা এবং ৫টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা রয়েছে। বেনজেমা এখন পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। ক্লাব এবং দেশের হয়ে ক্যারিয়ারে তিনি ৪০০ টিরও বেশি গোল করেছেন।
১৯৯৮ সালের পরে ফ্রান্সের কোনো খেলোয়ার ব্যালন ডি’অর জিতেনি কারন লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আগের ১৩ বারের মধ্যে তারাই ১২ বার এই পুরস্কার জিতেছিলেন। অবশেষে ২০২২ সালে জীবন নামক বাজি তে স্বপ্নের পুরস্কারটি জিতেন ফ্রান্সের করিম বেনজেমা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনের বিপক্ষে ১৭ সেকেন্ড-অর্ধ মিনিটে হ্যাটট্রিক এবং কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে চেলসির কাছে আরেকটি অ্যাওয়ে সহ তার মোট ৪৪ গোল রয়েছে। যা তাকে ২০২১-২২ মৌসুমে বছরের সেরা ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অর পাওয়া নিশ্চিত করে। সেই মেীসুমে আর যারা ব্যালন ডি’এর জিতেন:
- বায়ার্ন মিউনিখের সাদিও মানে, তিনি ম্যানচেস্টার সিটির কেভিন ডি ব্রুইনের পরে দ্বিতীয় ছিলেন।
- বার্সেলোনার অ্যালেক্সিয়া পুটেলাস মহিলাদের ব্যালন ডি’অর ধরে রেখেছেন।
বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা
জীবনে প্রতি ক্ষেত্রেই ঝুঁকি নিতে হয় হোক তা স্পোর্টস বেটিং বা রিয়েল ফুটবল খেলা। কারন ৩৪ বছর বয়সে ব্যালন ডি’অর জেতা অত সহজ নয় আর তা জিতে ফ্রান্সের করিম বেনজেমা প্রমান করে দিয়েছেন যে বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা।
তিনি বলেছিলেন:
“বয়স আমার কাছে শুধুমাত্র একটি সংখ্যা মাত্র, অন্যান্যরা বয়স শেষ না হওয়া পর্যন্ত খেলে কিন্তু আমার এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ার চরম ইচ্ছা রয়েছে। এই ইচ্ছাশক্তিই আমাকে এতদুর নিয়ে এসেছে এবং আমি কখনই হাল ছাড়িনি। এই প্রবল ইচ্ছাই এই স্বপ্নটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে এবং আমার অনুপ্রেরনা ছিল। আমি শুধুমাত্র আমার সর্বোচ্চটি দিতে চাই”
ফরাসি লিগে গোল্ডেন বুট জিতে যখন তিনি তার সম্ভাবনা দেখিয়েছিলেন তখন তিনি সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন খেলোয়ার ছিলেন। কিন্তু, রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার পর তার ক্যারিয়ার আবার নিম্নমুখী হয়ে ওঠে। কিন্তু তিনি কখনোই হতাশ হননি। আজ যদি রিয়াল মাদ্রিদ বাজি ধরার মতো ঝুঁকি নিয়ে তার ওপর বিনিয়োগ না করতো তাহলে হয়তো করিম বেনজেমার কখনোই ব্যালন ডি’অর জেতা হতো না। তাই যেকোনো কিছুতে বিশ্বাস রাখতে হয়, বিশ্বাস রাখলে বাজিতেও জেতা সম্ভব। যেমন বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো বাজি ধরার পুর্বে https://mightytips.guide/ এর মতো তথ্যসমৃদ্ধ সাইট থেকে বাজির খুটিনাটি, দল নির্বাচন, গেমের ধরন ও নিয়মাবলী, টিপস এবং ওডস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সবকিছু ভালোভাবে জেনে বুঝে বাজি ধরলে আপনিও সফল হতে পারবেন।
করিম বেনজেমা মঞ্চে দাড়িয়ে বলেছেন:
“এমন একটি কঠিন সময় ছিল যখন আমি ফরাসি দলে খেলারই সুযোগ পাইনি কিন্তু আমি কখনই কঠোর পরিশ্রম বন্ধ করিনি বা হাল ছেড়ে দেইনি, এটি সত্যিই আমার জন্যে গর্বের। যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমার এরকম পুরস্কার জেতার স্বপ্ন ছিল, আমি কখনই হাল ছাড়িনি। মন থেকে চাইলে সবকিছুই পাওয়া সম্ভব, বেনজেমা বলেন।”
এক যুগের সমাপ্তি
হয়তো শেষ পর্যন্ত এটি বলা যায় যে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর যুগ শেষ। গত ১৪ বছরের মধ্যে ১২টি ব্যালন ডি’অর পাওয়ার পর সর্বশেষ করিম বেনজেমা এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০২১-২২ সালে বেনজেমা ৪৬ ম্যাচে ৪৪ মোট গোল করেছিলেন যার মাধ্যমে তিনি রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং লা লিগা জিততে সাহায্য করেছিলেন। এটিই তাকে ব্যালন ডি’অর এনে দেয়। বেনজেমা বারবার মনে করিয়ে দেন ফুটবল খেলা বা বাজিতে হার জিত থাকবে কিন্তু লেগে থাকতে হবে। প্রতিদিন সবাই জিতবে না কিন্তু লেগে থাকলে একদিন না একদিন জয়ের দেখা মিলবেই।
রোনালদোর মতে করিম বেনজেমাই এই আসরের সেরা পুরস্কারটি পাওয়ার যোগ্য কারণ তিনি এই বছরে দারুন পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই তারকা বলেছিলেন:
“করিম যে এই পুরস্কারটি জিতবে তা আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম। গত মৌসুমে সে একটি আশ্চর্যজনক মৌসুম খেলেছে। আমি মনে করি সে এই পুরস্কারের যোগ্য। আমি এই পুরস্কার জিততে ৯ নম্বর মিস করেছি। ফুটবলে আমাদের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্ট্রাইকারম এর দায়িত্ব কি করিম তা দেখিয়ে দিয়েছেন”
বিশ্বব্যাপী অনুপ্রেরণা
করিম বেনজেমা কোন দেশের প্লেয়ার সেটা নিয়ে এখন কেউ কথা বলে না কারন এখন তিনি শুধু কোনো নির্দিষ্ট দেশের নন, গোটা বিশ্বের এক অনুপ্রেরনার নাম। যেকোনো বয়সেই সাফল্য অর্জন সম্ভব, যদি ইচ্ছা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকে। তার গল্প জাতি, ধর্ম বা ভৌগোলিক সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করে। জীবনটাও একটা বেটিং এর মতো এখানে ঝুকি খাকবে, সম্ভাবনা থাকবে কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। লেগে থাকলে সফল হওয়া সম্ভব।
তিনি তার বক্তৃতায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন:“আমার এ যাত্রা সহজ ছিল না, এটা আমার পরিবারের জন্যও কঠিন সময় ছিল। তবুও তারা সবসময় আমার পাশে ছিল”
“আমি রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়, ফরাসি দল, আমার কোচ এবং বিশেষ করে লিয়নের প্রেসিডেন্ট জিন-মিশেল আউলাসের প্রতি কৃতজ্ঞ, যিনি আমাকে সর্বদা সমর্থন করেছেন।”