Every action has equal and opposite reaction প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। আইজ্যাক নিউটনের এই তৃতীয় থিওরী টিকে কাজে লাগিয়ে বিমানের ইঞ্জিন বিমানকে আকাশে উড়াতে পারে। বিমানের ইঞ্জিন সামনে থেকে বাতাসকে শুষে নেয় এবং সেটা পিছন দিক দিয়ে প্রচন্ড প্রেসারে বের করে যার ফলে প্রচন্ড thrust বা ধাক্কা তৈরি হয়, যা বিমান টিকে আগে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বিমানের ইঞ্জিন এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিমানের ইঞ্জিনে প্রধানত ৪ টি পার্ট থাকে যথাঃ
- Intake fan
- Compressor
- Combustion Chamber
- Exhaust
Intake fan: ইনটেক ফ্যানের কাজ হল বাতাসকে বাইরে থেকে ইঞ্জিনের ভিতরে ঢুকানো।
Compressor: ইনটেক ফ্যানের মাধ্যমে বাতাস প্রথমে কম্প্রেসরের মধ্যে যায়। কম্প্রেসর বাতাসকে সংকুচিত করে Combustion Chamber এ পাঠায়।
Combustion Chamber: Compressor যখন বাতাসকে সংকুচিত করে Combustion Chamber এ পাঠায় তখন কম্বোসন চেম্বার বাতাসকে ফুয়েলের সাহায্য জ্বালিয়ে এনার্জি তৈরি করে। এখানে বাতাস জ্বলে যাওয়ার ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ নানা রকম গ্যাস তৈরি হয়, যার থেকে অনেক শক্তিশালী এনার্জি তৈরি হয়।
Exhaust: Combustion Chamber থেকে যখন বাতাস জ্বলে বিভিন্ন গ্যাসে পরিণত হয়, তখন এই গ্যাস গুলো সুপারসনিক স্পিডে বেড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সামনের দিক দিয়ে বাতাস ঢোকার কারনে সামনে দিয়ে যেহেতু গ্যাস গুলো বেড়োতে পারে না, সেহেতু গ্যাসগুলো পেছনে থাকা এই Exhaust এর সাহায্য সুপারসনিক স্পিডে পিছনের দিক দিয়ে বেড়িয়ে যায়। যা বিমানকে সামনের দিকে এগিয়ে দেয়।
বিমানের ইঞ্জিনের কিছু গোপনীয় টেকনোলজিঃ বিমানের ইঞ্জিনের কিছু কিছু যন্ত্রাংশ তৈরির metal কোম্পানি গুলো এতাটাই গোপন রাখে যে এটা অন্য কেউ সহজে তৈরি করতে পারে না। গোটা পৃথিবীতে হাতে গোনা দু’একটা কোম্পানি ছাড়া কেউ এফিসিয়েন্ট aircraft engine আজ অবধি তৈরি করতে পারে নি। ৪ টি প্রধান বিমান ইঞ্জিনের পার্ট ↓ তুলে ধরছিঃ
Compressor: বিমানের ইঞ্জিনের মধ্যে যে হাইটেক পার্ট গুলো রয়েছে তার একটি Compressor অন্যতম। কম্প্রেসর অনেক গুলো উইলের চাকা দিয়ে তৈরি হয়। কিন্তু প্রত্যেকটি উইলের চাকাই ঘোরে না। প্রত্যেক টি ঘুরন্ত চাকার মাঝে একটি স্থির ব্লেড লাগানো থাকে।আধুনিক জেট বিমান গুলো মোটামুটি 1.44, 1.50 ratio / অনুপাতে বাতাসকে কম্প্রেস করে ইঞ্জিনের ভিতরে ঢোকাতে পারে। সাধারণত বায়ুমন্ডলের প্রেসার থাকে 14.7 PSI, তাহলে বুঝুন কম্প্রেসর এই বাতাসকে ৪৪ থেকে ৫০ গুণ পর্যন্ত সংকোচন করতে পারে। বাতাস যখন প্রত্যেকটি ব্লেড পার করে তখন, ধীরে ধীরে বাতাস আরো অনেক পরিমাণে সংকোচন হতে থাকে। তাহলে আপনি যদি প্রশ্ন করেন বা বলেন অনেকগুলো বা বেশি পরিমাণে ব্লেড লাগিয়ে দিলেই তো বাতাসের সংকোচন আরো বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে আপনাকে জানিয়ে রাখি ব্লেডের সংখ্যা যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তবে বাতাসের চাপ কয়েকগুন পর্যন্ত বেড়ে যাবে। এজন্য একে অনেক ক্যালকুলেশন করে নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে হয়। যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাসকে Compress / সংকোচন করা যায়।
Combustion Chamber: জেট ইঞ্জিনে ব্যবহৃত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট Combustion Chamber. কম্বোসন চেম্বারে বাতাসকে জ্বালানির সাহায্য Burn/পোড়ানো হয়। আর বাতাসকে যখন এখানে পোড়ানো হয় তখন এখানকার তাপমাত্রা ২০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। খুব কম পদার্থই আছে যা ২ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পর্যন্ত intake থাকে। যে কোনো সাধারণ পদার্থই ঐ পরিস্থিতিতে গলে যাবে। এর জন্য বিজ্ঞানীরা একটি প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে যাকে Reverse flow বলা হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যে বাতাসটা সংকোচন হবার পরে Combustion Chamber এর দিকে প্রবাহিত হয় তার মাত্র ২০% বাতাসই Combustion Chamber এ প্রবেশ করতে পারে। বাকি ৮০% বাতাস কম্বোসন চেম্বারের বাইরে দিয়ে প্রবেশ করে এবং চেম্বারের দেয়ালে থাকা ছোট ছোট ফুটোর সাহায্য উল্টো দিক থেকে পুনরায় চেম্বারের ভিতরে প্রবেশ করে।এর ফলে যা হয় সামনে থেকে ঢোকা বাতাস এবং পিছনে দিয়ে যে বাতাস ঢুকছে সেই সব বাতাস Combustion Chamber এর মধ্যে একটা অদৃশ্য বাতাসের লেয়ার তৈরি করে। যার সাহায্য Combustion Chamber এর মধ্যে তৈরি হওয়া অত্যধিক তাপমাত্রা / আগুনটা Combustion Chamber এর দেয়াল ছুঁতে পারে না। যার জন্য কম্বোসন চেম্বারের ভিতরের অংশ ঠান্ডা থাকে। তবে এই কাজটিকে প্রচন্ড পরিমাণে ক্যালকুলেশন করে করতে হয়। কারণ Combustion Chamber এর মধ্যে যদি বাতাস কম ঢুকে তবে চেম্বারের মধ্যে থাকা জ্বালানি পুরোপুরি জ্বলবে না যতটা জ্বলার প্রয়োজন। আবার Combustion Chamber এর মধ্যে যদি বাতাস বেশি প্রবেশ করে তবেও সমস্যা, তখন আগুনটা নিভেও যেতে পারে। যেমন ধরুন প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে আপনি দিয়াশলাই জ্বালাতে পারবেন না।
Turbine: জেট ইঞ্জিনে ব্যবহৃত সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের মধ্যে অন্যতম একটা যন্ত্রাংশ হচ্ছে ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা টারবাইন। (( আপনি কি জানেন?? জেট ইঞ্জিনে ব্যবহৃত টারবাইন হচ্ছে, পৃথিবীতে আজ অবধি মানব তৈরি সব থেকে হাইটেক বস্তু)) কারণ হিসেবে বলিঃ ২০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জ্বলে যাওয়া যে বাতাস টা টারবাইনের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় সেটা মোটমুটি ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তো থাকবেই। তারপরে আবার বাতাস এখান দিয়ে বেড়িয়ে যায় সুপারসনিক স্পিডে।আপনি একটু ভাবুন তো, পৃথিবীতে যখন বিভিন্ন সাইক্লোন বা ঝড় হয়ে থাকে তখন এসব ঝড়ের গতিবেগ যদি শুধুমাত্র ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে হয় তবে আমাদের বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়।আর জেট ইঞ্জিনে যদি মোটামুটি (২০০×১৫) মানে ৩০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে যদি বাতাস বেড়িয়ে যায় তাও আবার সেই বাতাসের তাপমাত্রা যদি থাকে ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে কাচও গলে যায়, তাহলে এত পরিমাণ সহ্য কি করেই বা করে এই Turbine টিকে থাকে। আর সেজন্যই পৃথিবীতে যেকটি বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা তাদের বিমান ইঞ্জিনে ব্যবহৃত টারবাইন ব্লেডের টেকনলোজিকে গোপন রাখে। বর্তমানে দেখা যায় বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গুলো বিমানের ইঞ্জিনে থাকা টারবাইনের ব্লেডে ছোট ছোট ফুটো করে রাখে, যাতে ঐ ফুটো দিয়ে ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। এতে টারবাইনের তাপমাত্রা এবং ব্লেডকে ঠান্ডা রাখা যায়।
এসব নানা রকম অবিশ্বাস্য প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য জেট ইঞ্জিনকে মানব তৈরি সব থেকে গোপনীয় প্রযুক্তি ব্যবহার কারি আবিষ্কার হিসেবে গন্য করা হয়।