-

Google Adsense approve করাতে হলে যা করতে হবে

Approve Google Adsense: আগে জেনে নেয়া যাক গুগল অ্যাডসেন্স সম্পর্কে। গুগল অ্যাডসেন্স হচ্ছে গুগলেরই একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। এটি মূলত একটি বিজ্ঞাপনদাতা নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে গুগল ও তার ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে বা ইউটিউবের ভিডিওতে বিজ্ঞাপন প্রচার করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগের মালিক কিছু শর্তসাপেক্ষে তার সাইটে গুগল নির্ধারিত বিজ্ঞাপণ দেখানর বা স্থাপনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। বিজ্ঞাপণদাতাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৫০ থেকে ৬০ ভাগ টাকাই ওয়েবসাইটের মালিকদের মাঝে ভাগাভাগি করে নেয়। আর গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে যেকেউ অর্থ আয় করতে পারে। প্রচুর বাংলাদেশী ব্লগার এবং ওয়েবসাইটের মালিক গুগল অ্যডসেন্সের বিজ্ঞাপণ প্রদর্শণের মাধ্যমে বর্তমানে অর্থ আয় করছেন।

আপনার ওয়েব সাইটের জন্য  গুগল অ্যাডসেন্স এপ্লাই করার পূর্বে আপনাকে ওয়েবসাইটের যে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট দুই ধরনের হয়।
১. হোস্টেড গুগল অ্যাডসেন্স
২. নন-হোস্টেড গুগল অ্যাডসেন্স বা সম্পূর্ণ অনুমোদিত অ্যাডসেন্স
হোস্টেড অ্যাডসেন্স মানে হচ্ছে যারা আপনাকে ফ্রি হোস্টিং এবং ডোমেইন দিচ্ছে এবং এটি ব্যাবহার করে আপনি কোন খরচ ছাড়াই এদের মাধ্যমে আপনার পোস্ট বা ভিডিও শেয়ার করতে পারছেন। এইসকল মাধ্যম ব্যাবহার করে আপনি যে অ্যাডসেন্স পাবেন সেটা হচ্ছে হোস্টেড অ্যাডসেন্স। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন এসকল সাইট গুলোকে গুগল অ্যাডসেন্স এর পার্টনার হতে হবে। হোস্টেড এর ক্ষেত্রে আপনি যা ইনকাম করবেন সেটা তিনটা অংশে(প্রতিটা অংশের পারসেন্টেজ ভিন্ন হবে) ভাগ হবে। এক অংশ গুগল পাবে, আরেকটা পাবে ওই ফ্রি ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার  এবং শেষে আপনি পাবেন। হোস্টেড এর কিছু উদাহরনঃ ব্লগার, ওয়ার্ডপ্রেস, ইউটিউব ইত্যাদি।
আর নন-হোস্টেড অ্যাডসেন্স মানে হচ্ছে ডোমেইন এবং হোস্টিং আপনার নিজের কেনা এবং এর ফুল কন্ট্রোল আপনার হাতে। তাই এই সকল সাইটের মাধ্যমে ইনকামও হবে বেশি। শুধু মাত্র কিছু অংশ গুগল নেবে বাকি অংশ আপনি পাবেন।
এবার আসুন আলোচনা করা যাক অ্যাডসেন্সে এপ্লাই করার পূর্বে আপনার সাইটটি কেমন হতে হবে……
১. ওয়েবসাইটের ডিজাইনঃ গুগল চায় যে আপনার ওয়েব সাইটটি আপনার ব্যবহারকারীরা যেন খুব সহজ এবং সাছন্দে ব্যবহার করতে পারে।মনে করেন আপনি দুনিয়ার সব কালার দিয়ে সাইট ডিজাইন করলেন। এতে ভিজিটর যখন ভিজিট করবে তখন এত কালার মিশ্রন দেখে পরবর্তীতে সে নাও ঢুকতে পারে।আবার হোম পেজ থেকে অন্য পেজে যাওয়ার পর যদি আবার হোম পেজে সহজে ফিরে না আসতে পারে তাহলে ওই ব্যবহারকারীর কাছে আপনার সাইটটি একটি কারাপ অভিজ্ঞতা হতে পারে।  এতে ভিজিটর কমে যাবে এবং অনুন্নত সাইট ডিজাইনের জন্য Adsense approval নাও পেতে পারেন।
২.অ্যাডসেন্সের নীতিমালা: আপনার সাইটটি অবশ্যই গুগল অ্যাডসেন্সের নীতিমালা মেনে তৈরি করতে হবে যেমনঃ কোন কপি পেস্ট কন্টেন্ট থাকা যাবেনা একদম ইউনিক কন্টেন্ট থাকতে হবে , সাইটে অরগানিক ট্রাফিক লাগবে, অনলাইনে বিজ্ঞাপন  বা কোনো সফ্টওয়্যার দিয়ে ভিজিটর আনা যাবে না।
৩.পর্যাপ্ত পরিমাণের কন্টেন্ট: আপনার সাইটটি যদি ব্লগ অথবা নিউস সাইট হয় তাহলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পোস্ট থাকতে হবে অ্যাডসেন্স এ এপ্লাই করার পূর্বে। কমপক্ষে ৩০+ পোস্টের পরে যেয়ে এপ্লাই করা উচিত।আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখবেন আপনার সাইটে যেন খালি অথবা কোনো কন্টেন্ট ছাড়া পেজ না থাকে।
৪.রেসপন্সিভ ডিজাইনঃ আপনার সাইটের থিম/লেআউট রেস্পন্সিভ হতে হবে  এবং ভাল নেভিগেশন মেনু থাকতে হবে।যেন ভিজিটর আপনার সাইটে যেকোনো পেজ থেকেই হোম পেজ বা অন্য পেজে যেতে পারে।এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৫. ডোমেইনের বয়সঃ ডোমেইন কেনার সময় এক বছরের অধিক সময়ের জন্য ক্রয় করুন কারণ ডোমেইনের বয়স যত বেশি হবে approval পাওয়াটাও তত সহজ হবে। কারন গুগল বুঝবে যে সাইটটা স্থায়ী হবে ভবিষ্যতে।সাইটের বয়স মিনিমাম ৪৫ দিনের হওয়ার পর এপ্লাই করা উচিত নয়।
৬. আপনার সাইটে অবশ্যই About, Contact Us, DISCLAIMER & Privacy policy পেজ থাকতে হবে আর এই পেজ গুলো ইংলিশে বানালে ভাল। এটা অন্যতম একটা শর্ত গুগলের। এগুলো অটো তৈরি করার জন্য বিভিন্ন সাইট আছে। আপনি ওখান থেকে তৈরি করে নিতে পারেন বা নিজেও করতে পারেন।
৭.XML সাইটম্যাপ একটি ভালো মানের XML সাইটম্যাপ তৈরি করুন। গুগল ওয়েবমাস্টার টুলে জমা দিয়ে গুগলে ইনডেক্স করান। ওয়ার্ডপ্রেসে  XML সাইটম্যাপ তৈরি করার জন্য অনেক প্লাগইনস রয়েছে ওই গুলো ভ্যবহার করতে পারেন আবার অনেক ওয়েব সাইট রয়েছে সেই গুলো থেকে তৈরি করিয়ে নিতে পারেন।
৮. ডোমেইনের নামের সাথে মিল রেখে জিমেইল আইডি বানিয়ে ওই জিমেইল থেকে এপলাই করলে approval  হওয়ার চান্স বেশি তাই এই পদ্ধতিতে কাজ করে দেখতে পারেন।
৯. আপনার ডোমেইনে SSL Certificate রাখবেন এতে সাইটটি গুগলের কাছে আরো ট্রাস্টেড হয় আর approval হওয়ার  চান্সও বেশি।আর গুগল অ্যানালেটিকস এর সাথেও সাইট লিংক করে রাখবেন।
১০. অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট থেকে বাচিয়ে রাকবেন সাইটকে।


উপরে যে যে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি ওই গুলো মেনে কাজ করলে অবশ্যই আপনার সাইটে  Adsense approve দিয়ে দিবে। তাহলে আর আপনাকে Adsense approve করানোর জন্য টাকা দিয়ে কোনো ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হতে হবে না।আরটিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আর যদি কোনো সমস্যা হয় থাহলে এখানে কমেন্ট করুন বা আমাদের ফেইসবুক পেজে ম্যাসেজ দিন অবশ্যই সাহায্য করা হবে।

সর্বশেষ প্রকাশিত