ছাত্র অবস্থায় ব্যবসা করে পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া যায়। আবার পরবর্তীতে পড়ালেখা শেষে খুব সহজেই সেই ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা যায়।
বর্তমানে বাংলাদেশের বেকারত্বের হার অনেক বেশি। উচ্চশিক্ষা অর্জন করার পরও হাজার হাজার যুবক বেকার অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া অনেক পরিবার আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় পড়ালেখার খরচ চালাতে কষ্ট হয়। এক্ষেত্রে একজন ছাত্র নিজেই একটি ব্যবসা শুরু করে অল্প বয়সে উদ্যোক্তা হয়ে স্বাবলম্বী হতে পারে।
তাই ছাত্রদের জন্য বাছাই করা সেরা কয়েকটি অনলাইন ও অফলাইন/ফিজিক্যাল ব্যবসা করে আয়ের সুযোগ সম্পর্কে নিচে তুলে ধরা হলো।
ছাত্র অবস্থায় অনলাইনে আয়ের উপায়
ছাত্র অবস্থায় পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অনেকটাই কঠিন। ফলে এসময় ঘরে বসেই অনলাইনে ইনকাম করার জন্যই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা চেষ্টা করে থাকে। তাই আপনাদের জন্য ছাত্র অবস্থায় অনলাইন থেকে ইনকাম করার ৫টি সেরা উপায় নিচে তুলে ধরা হলো:
(১) ই-কমার্স ব্যবসা করে আয়
ই-কমার্স হলো এক ধরনের অনলাইন ব্যবসা যেখানে পণ্য বা সেবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশে দিন দিন এই ব্যবসার ব্যাপক প্রসার হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হলো- Daraz, Rokomari, এবং Pickaboo ইত্যাদি। প্রাথমিকভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
তবে অনলাইন প্লাটফর্ম এবং মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার ভালো ধারনা থাকলে,এর থেকে অনেক কম খরচেই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এছাড়াও ব্যবসার ধরণ এবং পণ্যের পরিমাণের ওপর খরচের পরিমান নির্ভর করে।
ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতেঃ
- একটি ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ,
- নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে বা উতপাদনকারী থেকে কম মূল্যে পণ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে।
- ওয়েবসাইট এসইও (SEO) বা ফেসবুক মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে।
এই ব্যবসার মাসিক আয় আপনার কাস্টমারের পরিমান, নির্ধারিত পণ্যের বাজার চাহিদা ও মার্কেটিং এর উপর নির্ভর করে ২০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকার বেশিও হতে পারে।
(২) ড্রপ শিপিং ব্যবসা করে আয়
ড্রপ শিপিং ব্যবসাটিও মূলত একপ্রকার ই-কমার্স ব্যবসা। কিন্তু এই ধরনের ব্যবসাতে আপনাকে পণ্য মজুদ রাখার প্রয়োজন হবেনা। এক্ষেত্রে আপনি কোন একটি কোম্পনির পণ্য নিজের কাছে সংগ্রহ না করেই, একটি অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছ থেকে অর্ডার সংগ্রহ করবেন। তারপর পণ্য ডেলিভারি করার সময় সেই কোম্পানি থেকে সরাসরি কাস্টমারের কাছে পণ্য প্রেরণ করা হবে। তারপর কাস্টমারের কাছ থেকে পণ্যের মূল্য সংগ্রহ করে আপনাকে আপনার লাভের হার বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
ড্রপ শিপিং ব্যবসা শুরু করতেঃ
- একটি অনলাইন স্টোরের প্রয়োজন হবে। (Shopify, WooCommerce বা অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে তৈরি করে নিতে পারবেন।)
- যেসকল কোম্পানির পণ্য বিক্রি করবেন, তাদের সাথে চুক্তি বা রেজিস্টার করতে হবে।
- মার্কেট রিসার্চ করতে হবে ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে।
ব্যবসা শুরু করতে প্রাথমিকভাবে ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে। তবে মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন খরচ মিলিয়ে কিছুটা বেশি হতে পারে। এই ব্যবসায় সঠিক পণ্য বাছাই ও ভালো মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাসিক ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার বেশি ইনকাম করা সম্ভব।
(৩) এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম
এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসাটি ড্রপশিপিং ব্যবসার মতোই। তবে এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন কোম্পানিতে একজন এফিলিয়েট পার্টনার হিসেবে রেজিস্টার করে, তাদের নির্দিষ্ট পণ্যগুলোর এফিলিয়েট লিংক নিতে হবে। তারপর সেই লিংক বিভিন্ন ভাবে প্রচার-প্রচারনা করতে হবে। তারপর উক্ত লিংক থেকে কোন ব্যক্তি পণ্য/ সেবা ক্রয় করলে কোম্পানি থেকে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন দেওয়া হবে।
এই ব্যবসার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, আপনি কোনপ্রকার ইনভেস্ট করা ছাড়াই এই ব্যবসার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। আপনার কাছে একটি ভালো ফলোয়ার যুক্ত ফেসবুক পেইজ, ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল এমনকি একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকলেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য কোম্পানি তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রির জন্য এফিলিয়েট পার্টনার নিয়ে থাকে। তাছাড়া ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি (Amazon, eBay, Shareasale ইত্যাদি) তো রয়েছেই। এক্ষেত্রে সবচেয়ে লাভজনক হয় বিভিন্ন কোর্স, ডিজিটাল প্রোডাক্ট ইত্যাদির এফিলিয়েট করা। প্রাথমিকভাবে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার মাসিক ৫-১০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবে। অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেলে ইনকামের এই সংখ্যা আরও ১০ গুন পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
(৪) ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম
বর্তমানে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি যুবসমাজ, বিশেষ করে ছাত্রদের আগ্রহ অনেক বেশি। কারন একজন ফ্রিল্যান্সার খুব সহজেই তার পড়ালেখা ও অন্যান্য কাজের পাশাপাশি অনলাইন থেকে বাড়তি ইনকাম করতে পারে। তবে সঠিক গাইডলাইন ও পর্যাপ্ত রিসোর্স না থাকায় অনেকেই সঠিকভাবে এই কাজে টিকে থাকতে পারেনা।
যাইহোক, আপনার কাছে যদি একটি কম্পিউটার/ ল্যাপটপ থাকে এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, তাহলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। এমনকি অনেকে মোবাইল দিয়েও ছোটখাটো টাস্ক কমপ্লিট করে ইনকাম করে থাকে।
একজন ফ্রিল্যান্সারকে সর্বপ্রথম নির্দিষ্ট কোন একটি কাজে দক্ষ হতে হয়। সাধারণত আমরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ বলতে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং এসকল কাজ গুলোকেই বুঝে থাকি। বর্তমানে এসকল কাজগুলো শেখার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও উপযুক্ত মাধ্যমে হলো ইউটিউব ও গুগল। এই দুটি প্লাটফর্ম থেকে ভালোভাবে রিসার্চ করলে এবং নিয়মিত চর্চা করলে কোন কোর্স করা ছাড়াই দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ল্যাপটপ/ কম্পিউটার নিতে ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা খরচ করতে হবে। তারপর কাজের দক্ষতা অর্জনের খরচ ও সময় নির্ভর করবে আপনার ডেডিকেশনের উপর। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ পাওয়ার জন্য আপনি Upwork, Fiverr, Freelancer.com, 99design ইত্যাদি মার্কেটপ্লেস এবং LinkedIn এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারবেন। একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে আপনার ধৈর্য্য, মনোযোগ ও দক্ষতা বৃদ্ধি চেষ্টা থাকতে হবে।
(৫) কন্টেন্ট রাইটার হয়ে ইনকাম
আমরা ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট পড়ে থাকি, ফেসবুকে বিভিন্ন পেইজে বড় বড় কন্টেন্ট পড়ে থাকি, কিংবা ইউটিউবে হাজারো ভিডিও দেখে থাকি। এ সকল ব্লগ পোস্ট, ফেসবুক কন্টেন্ট এবং ইউটিউব ভিডিও তৈরির জন্য স্ক্রিপ লিখতে প্রয়োজন হয় কন্টেন্ট রাইটারের।
তাই একজন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা থাকে অনেক। এসেছে আপনি একজন কন্টেন্ট ফাইটার হিসেবে বিভিন্ন প্লাটফর্মে লেখালেখি করে ভালো পরিমান ইনকাম করতে পারবেন। কন্টেন্ট রাইটিং ব্যবসাতে আপনার কোন পুঁজি লাগবে না। শুধুমাত্র ভালোভাবে রিসার্চ করার মত মানসিকতা থাকতে হবে।
ব্যবসাটি শুরু করার জন্য সৃজনশীলতার সাথে লেখার দক্ষতা, নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহের সামর্থ্য, এবং এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। মোবাইল দিয়েও কন্টেন্ট রাইটিং করা সম্ভব। ইংরেজি সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকলে এবং দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হতে পারলে, মাসে ৩০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকারও বেশি ইনকাম করা সম্ভব।
ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য Upwork, Fiverr এবং LinkedIn ইত্যাদি মাধ্যমগুলো ব্যবহার করতে পারেন। যদিও বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)/ Chatgpt আসার পরে কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা অনেক কমে গেছে। তবুও একজন দক্ষ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর/ কন্টেন্ট রাইটারের এখনো ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
অল্প পুঁজিতে ছাত্র অবস্থায় ব্যবসা করে আয়ের উপায়
পড়ালেখার পাশাপাশি নিজস্ব কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাইলে, এবং আপনি যদি উদ্যোক্তা মানসিকতার হোন, তাহলে নিজের ব্যবসা গুলো থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি বাছাই করে নিতে পারেন:
(১) স্ট্রীটফুডের ব্যবসা
ছাত্র অবস্থায় অল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে, বর্তমান সময়ের অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হলো স্ট্রীটফুডের ব্যবসা। উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য ছাত্ররা এই ব্যবসা শুরু করেছে।
স্ট্রীটফুডের ব্যবসার অন্যতম সুবিধাজনক দিকটি হলো, খুব সহজেই এ ব্যবসার পাশাপাশি পড়ালেখায় সময় দেওয়া সম্ভব। উপযুক্ত স্থানে ভালো মানের খাবার আইটেম নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারলে ছাত্র অবস্থাতেই আপনি মাসিক ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক ছাত্ররা ইতিমধ্যেই মাসিক লক্ষ টাকার উপরেও ইনকাম করছে।
স্ট্রীট ফুডের ব্যবসা যেকোন খাবার আইটেম নিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে আপনার এলাকায় মানুষের রুচি ও জীবনমানের উপর নির্ভর করে বার্গার, পিজ্জা, মিট বক্স, আইসক্রিম, বেকারি আইটেম, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, নুডুলস, স্যুপ, পাকোড়া, চিকেন রোল, হাঁস-দেশি মুরগির মাংস, ঝালমুড়ি, ফুচকা-চটপটি ইত্যাদি বিভিন্ন আইটেম নিয়ে শুরু করতে পারেন।
প্রাথমিকভাবে ব্যবসা শুরু করার জন্য:
- একটি ফুডকার্ট/ ছোট দোকান নিতে হবে। (পুঁজি কম থাকলে, এগুলো ছাড়াও শুরু করতে পারবেন)।
- নির্দিষ্ট খাবার তৈরির জন্য সরঞ্জাম।
- খাবার তৈরির কাঁচামাল।
- কাস্টমারদের কাছে খাবার পরিবেশনের জন্য সরঞ্জাম ইত্যাদি প্রয়োজন হবে।
ভালোভাবে এই ব্যবসা শুরু করতে চাইলে ৬০-৮০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। বিপরীতে মাসিক ৩০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ইনকাম সম্ভব।
(২) ক্রাফটিং ব্যবসা
ক্রাফটিং ব্যবসা বলতে হস্তশিল্পের ব্যবসাকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ হস্তনির্মিত, সৃজনশীল পণ্য তৈরি করে, যেমন গহনা, ঘরের সাজসজ্জায় ব্যবহারের সামগ্রী, উপহার সামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করাকে বুঝানো হয়। হস্তশিল্পের কাজে আপনার যদি পূর্ব ধারনা থাকে, তাহলে খুব সহজে এই ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন।
তবে আপনি যদি এই কাজ নাও পারেন, তাও অনলাইনে কোর্স করে বা বিভিন্ন ক্রাফটিং ইউটিউব চ্যানেল ফলো করে শিখে নিতে পারবেন। সুন্দর মানসিকতা, চিন্তাশীলতা, সৃজনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলী থাকলে আপনার কল্পনার বিভিন্ন শিল্পকর্মকে বাস্তবে হস্তশিল্পের মাধ্যমে রূপ দিতে পারবেন।
বাংলাদেশে সহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে হস্ত নির্মিত উপাদানের মূল্য থাকে সাধারণ সামগ্রীর তুলনায় অনেক বেশি। এক্ষেত্রে ব্যবসার শুরুর দিকে প্রচার প্রচারণার আগে পর্যন্ত ইনকাম কম হলেও, পরিচিত অর্জন করতে পারলে অনলাইনে এবং অফলাইনে আপনার তৈরি পণ্য ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে ক্রাফটিং ব্যবসা শুরুর জন্য:
- সাধারণ ক্রাফটিং সরঞ্জাম যেমন গ্লু গান, কাচি, থ্রেড, বিডস, রং এবং অন্যান্য উপকরণ লাগবে।
- ভালোভাবে নতুন প্রোডাক্ট তৈরি শিখতে হবে।
- হস্তশিল্প তৈরীর জন্য একটা আলাদা জায়গা থাকলে ভালো হয়।
এক্ষেত্রে আপনার ৫-১০ হাজার টাকা প্রাথমিক বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। ইউনিক এবং উচ্চমানের পণ্যের মাধ্যমে এই ব্যবসাতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করা সম্ভব।
(৩) অন ডিমান্ড টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসা
অনলাইনে বা অফলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে হতে টি শার্ট ডিজাইন ও প্রিন্টিংয়ের অর্ডার নিয়ে, কোন টি শার্ট প্রিন্ট করার দোকান থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিয়ে বিক্রি করাকে অন ডিমান্ড টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসা বলা হয়। এই ব্যবসাতে আপনার নিজের খুব বেশি বিনিয়োগ করতে হবে না। তবে অনলাইন ও অফলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার মূল টার্গেট হবে বিভিন্ন উৎসব, ট্যুর, শিক্ষা সফর, খেলার আয়োজন ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে। কারণ এ সকল আয়োজনের সময় মানুষজন একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নের টি-শার্ট পড়তে পছন্দ করে। তাই আপনি তাদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে টি-শার্ট প্রিন্ট করিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। অথবা অনলাইনে বিভিন্ন ডিজাইনের টি-শার্টের মার্কেটিং করে, অর্ডার কালেক্ট করে পরবর্তীতে একই পদ্ধতিতে সেগুলো হোম ডেলিভারি দিতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার বিনিয়োগের পরিমাণের ৫০% লাভ করা সম্ভব।
(৪) কোয়েল পাখি পালন
পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ করতে আপনি কোয়েল পাখি পালন শুরু করতে পারেন। খুবই ছোট পরিসরে আপনার ভাষাতেই এই পাখি পালন করা সম্ভব। প্রাথমিকভাবে একটি খাঁচা তৈরি করে, অল্প কিছু কোয়েল পাখি কোন খামার থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর সেই পাখিগুলো থেকে ডিম ও বাচ্চা উৎপাদন করে ধীরে ধীরে আপনার খামার সম্প্রসারণ করতে পারবেন। কোয়েলের বাচ্চা ও ডিম বিক্রি করে মোটামুটি ভালোই উপার্জন সম্ভব।
(৫) দেশি মুরগি পালন
আপনি যদি গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন এবং আপনার বাড়ির পাশে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকে তাহলে দেশি মুরগি পালন শুরু করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে একটি খাঁচা তৈরি করে এবং চারিদিকে জাল দিয়ে আবদ্ধভাবে পালন করতে পারেন।
বর্তমানে দেশি মুরগির বাজার চাহিদা ও বাজারমূল্য অনেক বেশি। তাছাড়া অন্যান্য জাতের মুরগি থেকে কম খরচে এগুলো পালন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন
- কম টাকায় ৭টি ডিলারশিপ ব্যবসা আইডিয়া
- বাংলাদেশে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা করার নিয়ম
- রিয়েল এস্টেট ব্যবসা কি?
শেষকথা
উপরোক্ত ছাত্রদের জন্য ব্যবসার আইডিয়াগুলো থেকে কোনোটি শুরু করতে চাইলে, ব্যবসা সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জেনে নিবেন।