আজকের পাউন্ড রেট কত, ১ পাউন্ড সমান কত টাকা বা ১০০ পাউন্ড সমান কত টাকা সে সম্পর্কে আপডেট তথ্য জেনে নিন এখানে।
বর্তমানে ব্রিটিশ পাউন্ড বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা। এটি আন্তর্জাতিক লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের সাথে অন্যান্য প্রধান প্রধান উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে এর ব্যবহার অনেক বেশি। আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে।
British Pound GBP to BDT Bank rate
মুদ্রার মান বিবেচনায় বর্তমানে ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং হলো বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুদ্রা। বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ীরা এই মুদ্রার মাধ্যমে বড় বড় বাণিজ্যিক লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে। তাছাড়া অনেক বাংলাদেশী নাগরিক প্রবাসী হিসেবে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে। কেউ কেউ আবার যুক্তরাজ্যে যেতে চায় বলে, আগ্রহের সাথে সেই দেশের মুদ্রার মানুষ জানতে চায়।
সকল ক্ষেত্রেই আজকের পাউন্ড রেট বাংলাদেশে কত টাকা, সে সম্পর্কে আপডেট তথ্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্রিটিশ ১ পাউন্ড সমান কত টাকা সে সম্পর্কে আপডেট রেট জেনে নিতে পারেন এই লেখা থেকে।
আজকের পাউন্ড রেট কত – 1 পাউন্ড সমান কত টাকা?
আজকের পাউন্ড রেট বাংলাদেশী টাকায় বিনিময় করলে, প্রতি ১ পাউন্ডের বিনিময়ে বাংলাদেশের ১৫০.৫৯৪৫ টাকা হবে। আজকের দিনে কেউ যদি যুক্তরাজ্য বা লন্ডন থেকে বাংলাদেশের কোন অনুমোদিত ব্যাংকে পাউন্ড পাঠায়, তাহলে প্রতি ১ পাউন্ডের জন্য ১৫০.৫৯৪৫ টাকা করে সংগ্রহ করতে পারবে।
আবার কেউ যদি বাংলাদেশি টাকা বিনিময় করে যুক্তরাজ্য থেকে কোন কিছু আমদানি করতে চায়, বা অন্য কোন ব্যবসায়িক / ভ্রমণের প্রয়োজনে অর্থ লেনদেন করে, তাহলে যুক্তরাজ্যের কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ পাউন্ড সংগ্রহ করতে চাইলে, বাংলাদেশের ১৫০.৫৯৪৫ টাকা পাঠাতে হবে।
(বি:দ্র: মনে রাখবেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময় হার যেকোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তাই পাউন্ড এমনকি কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেও পরিবর্তিত হতে পারে। তাই সে বিষয়ে অর্থ লেনদেনের পূর্বে যাচাই-বাছাই করে নিবেন।)
আজকে ১ পাউন্ড সমান কত টাকা? (GBP to BDT)
ব্রিটেন পাউন্ড স্টার্লিং (GBP) | বাংলাদেশি টাকা (BDT) |
1 পাউন্ড | 150.5945 টাকা (▼) |
10 পাউন্ড | 1505.945 টাকা (▼) |
50 পাউন্ড | 7,529.725 টাকা (▼) |
100 পাউন্ড | 15,059.45 টাকা (▼) |
500 পাউন্ড | 75,297.25 টাকা (▼) |
1000 পাউন্ড | 1,50,594.5 টাকা (▼) |
5000 পাউন্ড | 7,52,972.5 টাকা (▼) |
উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত তালিকায় যেই প্রতীক গুলো ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর ব্যবহারিক ব্যাখ্যা হলো:
- (▲) মুদ্রার রেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
- (▼) মুদ্রার রেট হ্রাস পেয়েছে।
- (●) মুদ্রার রেট অপরিবর্তিত রয়েছে।
১ পাউন্ড কত টাকা?
আজকের আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী, লন্ডনের এক পাউন্ড বাংলাদেশের ১৫০.৫৯৪৫ টাকার সমান মূল্য বহন করে। বাংলাদেশ থেকে বহু বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা এবং আমদানি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো পাউন্ডের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সাথে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
সে সকল প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত / রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য ব্রিটিশ পাউন্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলে, আজকের পাউন্ড রেট অনুসারে ১ পাউন্ড সমান ১৫০.৫৯৪৫ টাকা হারে লেনদেন করতে হবে।
১০০ পাউন্ড সমান কত টাকা?
আজকের টাকার রেট অনুযায়ী, ব্রিটিশ পাউন্ড বাংলাদেশী টাকায় বিনিময় করলে, ১০০ পাউন্ড সমান ১৫,০৫৯.৪৫ টাকা হবে। উপরোক্ত টেবিলে আজকের পাউন্ড রেট সম্পর্কে বিস্তারিত তালিকা দেওয়া রয়েছে।
সেই টেবিল থেকে আপনার লেনদেনকৃত অর্থের পরিমাণ অনুযায়ী, পাউন্ডের রেট বাংলাদেশি টাকায় আজকের দিনে কত হবে তা জেনে নিতে পারেন। তাছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ পাউন্ডের মূল্য বাংলা টাকা কত হবে তা জানতে, প্রতি পাউন্ডকে ১৫০.৫৯৪৫ টাকায় গুন করলেই হবে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে (আমদানি ও রপ্তানিতে) ব্রিটিশ পাউন্ডের ব্যবহার
ব্রিটিশ পাউন্ড দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মূলত পাউন্ড মুদ্রাটি আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক লেনদেনে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং এবং বাণিজ্যে পাউন্ডের অবস্থান অনেক শক্তিশালী।
পাউন্ডের স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে এবং লন্ডন বিশ্বের অন্যতম অর্থনীতির কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে, বহু আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং বাণিজ্যিক সংস্থা পাউন্ডের মাধ্যমে লেনদেন করে থাকে। বর্তমানে লন্ডন আন্তর্জাতিক আর্থিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শহর। ফলে পণ্য, সেবা, এবং মূলধনী বাজারে পাউন্ডের ব্যবহার অনেক বেশি প্রাধান্য পায়।
আন্তর্জাতিক বাজারে, ব্রিটিশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি চুক্তি সম্পাদনের জন্য ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যবহার করে। ফলে আমদানিকারকরা পাউন্ডের মাধ্যমে তাদের লেনদেন সম্পন্ন করে। ব্রিটেনের রপ্তানি বাণিজ্যও ব্রিটিশ পাউন্ডের উপর নির্ভর করে। কারণ ইউরোপ, আমেরিকা, এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পাউন্ড ব্যবহৃত হয়।
ব্রিটিশ পাউন্ডে লেনদেন করার সবচেয়ে সুবিধাজনক দিকটি হলো এই মুদ্রাটি বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বের প্রধান প্রধান আর্থিক সংস্থাগুলোর সাথে এই মুদ্রার গভীর সংযোগ রয়েছে। তাই বর্তমানে পাউন্ড বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রায় পরিণত হয়েছে এবং সকলেই স্বাচ্ছন্দে এর মাধ্যমে লেনদেন করে থাকে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে ব্রিটিশ পাউন্ডের স্থিতিশীলতার প্রভাব
আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে ব্রিটিশ পাউন্ডের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্রিটিশ পাউন্ডের স্থিতিশীলতা নির্ভর করে বৈশ্বিক অর্থনীতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয়বস্তু।
ব্রিটিশ পাউন্ডের মুদ্রার মান স্থিতিশীল থাকলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয়ের জন্যই সুবিধাজনক হয়। কারন একটি নির্দিষ্ট মুদ্রায় এবং নির্দিষ্ট বাজারমূল্যে লেনদেন করা যায়।
বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য মুদ্রার সাথে পাউন্ডের প্রতিযোগিতা
আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে প্রতিটি দেশেই চায় তাদের নিজস্ব মুদ্রা অত্যন্ত শক্তিশালী হোক। তাই প্রতিটি দেশই নিজ দেশের মুদ্রাকে সবচেয়ে দামি মুদ্রা বানাতে ব্যাপকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে ব্রিটিশ পাউন্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী মুদ্রা হলো আমেরিকান ডলার, ইউরো, এবং জাপানি ইয়েন।
যদিও বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মুদ্রা হিসেবে কুয়েতি দিনের ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তিতে বিবেচনা করলে সেই মুদ্রা অনেকাংশেই পিছিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, ইউরো চালু হওয়ার পর থেকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পাউন্ডের প্রভাব কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের সাথে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোর ভূমিকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এভাবে বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য মুদ্রার সাথে পাউন্ডের অর্থনীতির ব্যাপক প্রতিযোগিতা চলছে।
ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং এর নোট ও মুদ্রা/ কয়েন সমূহ
ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মুদ্রা। প্রাচীনকাল থেকে এই মুদ্রার ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের ধাতব মুদ্রা, কয়েন, নোট ইত্যাদির ব্যবহার ছিল। নিচে ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং এর নোট ও মুদ্রা/ কয়েন সমূহের তালিকা দেওয়া হলো:
ব্রিটিশ পাউন্ডের নোট সমূহ
বর্তমানে ব্রিটেনের মুদ্রা ব্যবস্থায় চারটি প্রধান নোট রয়েছে। এগুলো হলো:
- ৫ পাউন্ড: £5 নোটে উইনস্টন চার্চিলের ছবি।
- ১০ পাউন্ড: £10 নোটে জেন অস্টেনের ছবি।
- ২০ পাউন্ড: £20 নোটে জে.এম.ডব্লিউ টার্নারের ছবি।
- ৫০ পাউন্ড: £50 নোটে অ্যালান টুরিংয়ের ছবি।
এসকল নোট গুলো সাধারণত পলিমার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে নোটগুলো কাগজের তুলনায় আরো বেশি মজবুত ও স্থায়িত্বশীল হয়।
ব্রিটিশ পাউন্ডের মুদ্রা সমূহ:
বর্তমানে ব্রিটেনের মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত নোট সমূহ হলো: 1 পেন্স, 2 পেন্স, 5 পেন্স, 10 পেন্স, 20 পেন্স, 50 পেন্স, 1 পাউন্ড এবং 2 পাউন্ড।
মূলত ব্রিটিশ পাউন্ডের সূচনাকালে মুদ্রার বাহক হিসেবে এই কয়েনগুলোই ব্যবহৃত হতো। এসকল কয়েনগুলোর মধ্যে বৃটেনের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রতীকের ডিজাইন রয়েছে। যেমন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি, জাতীয় প্রতীক এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী নকশা। বর্তমানকালে আধুনিক যুগে এসেও এই কয়েনগুলো যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের ঐতিহ্য বহন করে।
শেষকথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আজকের পাউন্ড রেট কত, ১ পাউন্ড সমান কত টাকা বা ১০০ পাউন্ড সমান কত টাকা সে সম্পর্কে আপডেট তথ্য জানতে পারলেন। তবে যেহেতু এই মুদ্রার মান যেকোন সময়েই পরিবর্তন হতে পারে, তাই প্রতিবার লেনদেনের পূর্বে সর্বশেষ আপডেট তথ্য জেনে নিবেন।