Bangla Health Tips: ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা কমবেশি প্রায় আমাদের সবারই দেখা দেয়। আমাদের স্কিনের পোরস গুলোতে প্রতিনিয়তই ময়লা জমে। এই ময়লা ঠিক মতো পরিষ্কার না করা হলে এর উপর আরও বেশি তেল ময়লা জমতে থাকে। এক সময় তা বাতাসের সংস্পর্শে এসে অক্সিডাইযড হয়ে ব্ল্যাকহেডস এর রূপ নেয়। শুরু থেকে সচেতন না হলে এটি এক রকম স্থায়ীই হয়ে বসে যায়, অপরিচ্ছন্ন করে তোলে আপনার স্কিন। স্কিন তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়, হয়ে পড়ে অমসৃণ। এমনকি ঐ স্থানে মেকআপ করলেও তা ঠিকমতো বসতে চায় না। সাধারণত মুখ ও নাকের ত্বকের লোমকূপে কালো হয়ে জমে থাকে ব্ল্যাকহেডস। অনেকের কানে, পিঠে, ঘাড়েও ব্ল্যাকহেডস দেখা দিতে পারে। আজ ব্ল্যাকহেডস ওঠানোর কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
মধু: ব্ল্যাকহেডস ওঠানর জন্য মধু খুবই আদর্শ। দারুচিনি গুঁড়ো আর মধু ২:১ পরিমাণে মিশিয়ে ব্ল্যাকহেডস এর উপর ১৫ – ২০ মিনিট রাখুন। এর পর ২ মিনিট মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। একই সাথে এটি ময়েশ্চারাইজার আর স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। সপ্তাহে ২ বার ব্যবহারে ব্ল্যাকহেডস অনেকটাই কমে আসবে।
লবণ: রিফাইন্ড লবণ নয়, একটু মোটা দানাদার লবণের কথা বলছি। এটি যেমন চটজলদি ব্ল্যাকহেডস এর স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে তেমনি অয়েলি স্কিন এর অতিরিক্ত অয়েল কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। খুব সামান্য পরিমাণ লবণ নিন (২ চিমটি) এতে কয়েক ফোঁটা পানি যোগ করুন। এরপর ব্ল্যাকহেডস এর ওপর মাসাজ করুন লবণ গলে না যাওয়া পর্যন্ত। এর পর ঈষদুষ্ণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন। তবে পুরো মুখে এটি ব্যবহার করবেন না, শুধু মাত্র ব্ল্যাকহেডস আক্রান্ত অংশের জন্য এই স্ক্রাবটি ব্যাবহার করুন।
টমেটো: ব্ল্যাকহেডস দূর করতে জাদুর মতো কাজ করে টমেটো। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে টমেটোর শ্বাস ত্বক লাগিয়ে রাখুন, সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। টমেটোর ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান ব্ল্যাকহেডস শুকাতে সাহায্য করে। এটা খুব ভালো এক্সফলিয়েটর এবং এর অ্যাসিডিক উপাদান লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া এড়াতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: গ্রিন টি মুখে ব্যবহার করলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ময়লা ও ব্ল্যাকহেডস ওঠাতে সাহায্য করে। এক টেবিল চামচ গ্রিন টির শুকনা পাতা পানির সঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। প্রতিদিন একবার ব্যবহারে ব্ল্যাকহেডস অনেকটাই কমে আসবে।
দারুচিনি: এক টেবিল-চামচ লেবুর রস ও দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। চাইলে এতে এক চিমটি হলুদও দিতে পারেন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দারুচিনি লোমকূপ টানটান করতে সাহায্য করে ও রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। লেবুর রসের ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান ব্রণ কমায়। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইট হেডস দুটোই দূর করে।
টুথপেস্ট: অনেকদিনের জমে থাকা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কার করা বেশ কঠিন ব্যাপার। সেক্ষেত্রে সামান্য সাদা টুথপেস্ট নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। এরপর নরম একটি টুথ ব্রাশের সাহায্যে আস্তে আস্তে স্ক্রাব এর মতো করে ঘষতে থাকুন। ত্বকের মরা চামড়া উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গে এটি ব্ল্যাক হেডস গুলোকে নরম করে ফেলে। ব্রাশ দিয়ে ঘষে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ৫ মিনিট গরম পানির ভাপ নিন। এতে পোরস গুলো খুলে যাবে। এরপর আবারো ব্রাশ দিয়ে ঘষুন, দেখবেন খুব সহজেই ব্ল্যাক হেডস গুলো উঠে আসবে। সপ্তাহে ১ বারই যথেষ্ট।
লেবু চিনির স্ক্রাব: ঘরোয়া পদ্ধতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এটি। মাঝারি সাইজের একটা লেবুর রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ব্ল্যাকহেডস আক্রান্ত স্থানে মাসাজ করুন চিনি গলে যাওয়া না পর্যন্ত। এর পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ বার করুন। শুধু ব্ল্যাকহেডস দূর করাই নয়, স্কিনের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতেও এর জুড়ি নেই।
ডিমের সাদা অংশ: মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। সম্পূর্ণ শুকালে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও ব্ল্যাকহেডস দূর হবে। ডিমের সাদা অংশ লোমকূপ টান টান করতে এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে। মধু ত্বক গভীর থেকে নরম ও কোমল করে।
পরিশেষে, আপনার ব্যবহারের বালিশের কভার, তোয়ালে সবসময় পরিষ্কার রাখুন। ব্ল্যাকহেডস, পিম্পল, খুশকি সব কিছুর প্রকোপ থেকেই একেবারে না হোক কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন। আপনার স্কিনের ধরন অনুযায়ী উপরের যেকোনো পদ্ধতি বেছে নিন। নিয়মিত করলে ব্লাকহেডস থেকে অবশ্যই মুক্তি পাবেণ।
আরও পড়ুন:
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সহজ সমাধান – Bangla Health Tips
নাক ডাকা থেকে চিরমুক্তি – Bangla Health Tips
মাইগ্রেনের অসহ্য ব্যাথা থেকে মুক্তি – Bangla Health Tips
লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।